আমার সাড়ে ১৮ বছরের ছেলে কিভাবে এমন কাজ করলো: দিহানের বাবা
রাজধানীর কলাবাগানে ‘ও’ লেভেল পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ইফতেখার ফারদিন দিহানের পরিবারের কাছে এ ঘটনা নতুন নয়।
২০১১ সালে তার বড় ভাই সুপ্ত রাজশাহী নগরীর হোসেনীগঞ্জের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে রুনা খাতুনকে বিয়ের পর অত্যাচার করে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা মেলেনি রাজশাহীর দুর্গাপুরের গ্রামের বাড়িতে কারোরই।
স্থানীয়রা জানায়, দিহানের বাবারা পারিবারিকভাবে ধনাঢ্য ব্যক্তি। তবে দিহান যদি এ ধরনের নেক্কারজনক কাজ করে থাকে অবশ্যই তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার রাতুগ্রাম গ্রামের আবদুর রউফ সরকার। তার তিন ছেলের মধ্যে দিহান সবার ছোট। অবসরপ্রাপ্ত আব্দুর রউফ ছিলেন জেলা-রেজিস্ট্রার। এ বাড়ি ছাড়াও জেলার বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরে তাদের আরও একটি বাড়ি আছে। রাজশাহী শহরেও আছে দু’টি বাড়ি। এর একটি সাগরপাড়া এলাকায়। আরেকটি বাড়ি মহানগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকায়। ঢাকায়ও রয়েছে ফ্ল্যাট।
স্থানীয়রা জানান, বড় ছেলে সুপ্তকে নিয়ে আবদুর রউফ সরকার গ্রামে থাকেন। আর মা সানজিদা সরকার শিল্পীর সঙ্গে দিহান ও তার মেজ ভাই নিলয় ঢাকায় থাকেন। নিলয় একটি ব্যাংকে চাকরি করেন। ছোটবেলা থেকেই দিহান রাজধানী ঢাকায় থাকেন। তাই তার সম্পর্কে গ্রামের মানুষের ধারণা কম। তবে তার বড় ভাই সুপ্তর ব্যাপারে ছিল তাদের ধারণা নেতিবাচক।
এর আগেও রাজশাহীতে থাকাকালীন সময়ে ২০১১ সালে দিহানের বড় ভাই সুপ্ত রাজশাহী নগরীর হোসেনীগঞ্জের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে রুনা খাতুনকে বিয়ের পর অত্যাচার করে মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাবা আব্দুর রউফ সরকার সে সময় সাব-রেজিস্ট্রার থাকায় টাকার বিনিময়ে ঘটনাটা ধামাচাপা দেয়।
অভিযুক্ত দিহান ও সুপ্তের বারবার অপরাধ বাবার প্রশ্রয়ে সীমা ছাড়িয়েছে বলে জানায় তাদের গ্রামের বাড়ি দুর্গাপুরের লোকেরা।
- আরো পড়ুন...
- ছেলের সর্বোচ্চ শাস্তি চান দিহানের মা সানজিদা
- ২০২০ সালে ধর্ষণের শিকার ১০৭৪ নারী (ভিডিও)
- আনুশকার শরীরে মিলেছে রহস্যজনক ‘ফরেন বডির’ আলামত
কেউ কেউ বিশ্বাসই করতে চায় না দিহান এমন জঘন্যতম কাজ করতে পারে তবে তারা এও মনে করেন যে ঘটনাটি যদি প্রমাণিত হয় তবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।
দিহানের চাচাতো ভাই কবির জানান, আমার চাচা রউফ সরকার গ্রামের বিভিন্ন দিক সেবামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। কিন্তু পত্রপত্রিকাতে তার বড় ছেলের বিষয়ে যা লেখা হয়েছে তা ভিত্তিহিন। তবে ছোট ছেলের বিষয়ে তারা সত্যিই জানেন না কি ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথাও তিনি বলেছেন।
রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলার দুই নম্বর কিসমত গণকৈর ইউনিয়নের মেম্বার ফজলুর রহমান বলেন, ধর্ষণের মতো ঘটনা কারোরই কাম্য না। এ ধরনের ঘটনা আমরা দেখতে চাই না। দিহান এই গ্রামের আবদুর রউফ সরকারের ছেলে। সে ধর্ষণের পর হত্যার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তদন্ত স্বাপেক্ষে যারা প্রকৃত অপরাধী বা দোষী তাদের শাস্তি হোক এটাই আমরা চাই।
এদিকে, সরজমিনে গ্রামের বাড়িতে গিযে আব্দুর রউফের সঙ্গে দেখা না পেয়ে মুঠোফনে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, ছেলের বয়স সাড়ে আঠারো উনিশ বছর। হঠাৎ করে কী করে যে কি হলো তা আমি বলতে পারব না। এটা আমার দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কিছু না। আমি সারা জীবন সৎভাবে জীবন যাপন করেছি আমার ছেলে যদি অপরাধী হয় তবে অবশ্যই তার শাস্তি হবে।
জেবি
মন্তব্য করুন